এএফসি অনূর্ধ্ব-২০ নারী এশিয়ান কাপ বাছাইসাগরিকা ও মুনকির গোলে লাওসকে ৩-১ গোলে হারালো বাংলাদেশ

এএফসি অনূর্ধ্ব-২০ নারী এশিয়ান কাপ বাছাইয়ে দুরন্ত সূচনা করলো বাংলাদেশ। স্ট্রাইকের সাগরিকার জোড়া ও মিডফিল্ডার মুনকি আক্তারের এক গোলের সুবাদে ফিফা নারী ফুটবলের র্যাঙ্কিয়ে ২১ ধাপে এগিয়ে থাকা লাওসকে ৩-১ গোলে হারিয়েছে আফঈদা খন্দকারের দল।
প্রথমার্ধে সাগরিকা গোল করে বাংলাদেশকে এগিয়ে দেন। দ্বিতীয়ার্ধে ব্যবধান বাড়ান মুনকি। ৮৭ মিনিটে বাংলাদেশের রক্ষণের ভুলে ব্যবধান কমায় স্বাগতিক লাউসের মেয়েরা। অবশ্য বেশি সময় অপেক্ষা করতে হয়নি ম্যাচে নিজের দ্বিতীয় গোল তুলে নেন সাগরিকা। শেষ পর্যন্ত ৩-১ গোলের জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-২০ নারী ফুটবল দল।
এছাড়াও বাংলাদেশের দুটি শট লাওসের ক্রসবারে লেগে ফিরে আসে। এছাড়াও বেশ কিছু গোলের সহজ সুযোগ নষ্ট করেছে পিটার বাটলারের মেয়েরা। নইলে জয়ের ব্যবধানটা আরো বড় হতো বাংলাদেশের।

২০২৬ সালে থাইল্যান্ডে অনুষ্ঠিত হবে এ এফ সি অনূর্ধ্ব-২০ নারী ফুটবলের চূড়ান্ত পর্ব। বাছাই পর্বে বাংলাদেশ খেলছে এইচ গ্রুপে। গ্রুপের অন্য দুই দল দক্ষিণ কোরিয়া ও অপেক্ষাকৃত দুর্বল দল তিমুর লেস্তে। স্বাভাবিকভাবে দক্ষিণ কোরিয়া এই গ্রুপের শক্তিশালী ও হট ফেভারিট। তাই বাংলাদেশের লক্ষ্য রানার্স আপ হয়ে চূড়ান্ত পর্বে খেলা। আর্ট গ্রুপের চ্যাম্পিয়ন দল ২০২৬ সালে অনুষ্ঠিত এফসি অনূর্ধ্ব-২০ নারী ফুটবলের চূড়ান্ত পর্বে খেলবে। বাকি ৮ গ্রুপের রানার্স আপ দলও খেলবে চূড়ান্ত পর্বে।
সে কারণে লাউসের বিপক্ষে জয়টা প্রয়োজন ছিল বাংলাদেশের। ফিফা র্যাংকিংয়ে ২১ ধাপ এগিয়ে থাকা লাওস এর বিপক্ষে জয় নিয়ে প্রাথমিক কাজটা সেরে রাখল পিটার বাটলারের দল।
লাওস ইন্টারন্যাশনাল স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ম্যাচের শুরু থেকেই বাংলাদেশ লাওসের ওপর প্রাধান্য বিস্তার করে খেলতে থাকে। ম্যাচের ৩৬ মিনিটে সাগরিকার গোলে লিড নেয় বাংলাদেশ। কর্ণার থেকে উড়ে আসা বল হেডে লাওসের জালে পাঠান সাগরিকা। ১-০ গোলের লিড নিয়ে প্রথমার্ধ শেষ করে বাংলাদেশ।
ম্যাচের দ্বিতীয়ার্ধের লাওস সমতা ফেরানোর চেষ্টা করেছিলো উল্টো মুনকি আক্তার গেল করে ব্যবধান বাড়ান। মুনকির গোলটি ছিল দেখার মতে। স্বাগতিক এক ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে এগিয়ে যান মুনকি। এ সময় তার সামনে ছিল লাওসের গোলরক্ষক। তাকে বোকা বানিয়ে এক পাশ দিয়ে বল পাঠান বাংলাদেশের এই মিডফিল্ডার।
প্রথমার্ধে এগিয়ে যাওয়ার পর ক্রসবারে লেগে বাংলাদেশ গোল বঞ্চিত হয়। ৩৬ মিনিটে সাগরিকার গোলের তিন মিনিট পর সিনহা শিখার শট ক্রসবারে লেগে ফিরে আসে। দ্বিতীয়ার্ধে একইভাবে গোল বঞ্চিত হয়ে বাংলাদেশ। মুনকি আক্তারপর গোলের পরও একইভাবে বাংলাদেশের আরেকটি আক্রমণ প্রতিহত হয়।
৮৫ তম মিনিটে স্বাগতিক লাওস একটি গোল শোধ করে ম্যাচে ফেরার ইঙ্গিত দেয়। মূলত রক্ষণের ভুলে এই সময়ে গোল হজম করে আফঈদার দল।
ম্যাচের বাকিটা সময় লাওস সমতা ফেরানোর চেষ্টা করেছিল কিন্তু সফল হয়নি। উল্টো তারা আরও এক গোল হজম করে। চার মিনিটের ইনজুরি সময়ে দলীয় এক আক্রমণের সফল বাস্তবায়ন করেন সাগরিকা। ম্যাচে তুলে নেন নিজের দ্বিতীয় গোল।
গত জুলাই মাসের ১১ থেকে ২১ তারিখ ঢাকায় অনুষ্ঠিত সাফ অনূর্ধ্ব-২০ নারী চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে সাগরিকা একাই করেছিলেন ৪ গোল। ঠাকুরগাঁওয়ের এই মেয়ে এবার দক্ষিণ এশিয়ার গণ্ডি পেরিয়ে গোল করলেন এশিয়ার বড় মঞ্চে। বিশেষ করে তার দ্বিতীয় গোলটি ছিল দেখার মত।